ব্রজ দাস ( পূর্বস্থলী ) : বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে আজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালালেন কমিটির সদস্যরা। পূর্বস্থলীর কিছু এলাকায় অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা ছিল প্রবল । আর সেই কারণেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হতো সেই সব ছেলেমেয়েদের ও তাদের পরিবারের লোকজনদের। সমস্যায় পড়তে হতো স্কুলশিক্ষকদের এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ।সেই সমস্যা কে চিরতরে দূর করাতে দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মিরাপুর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাথায় আসে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে কিছু একটা করতেই হবে । আর তখনই ২০১২ সালে ওই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েই তৈরি হয় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি । স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েই নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যশপুর ও মিনাপুর এলাকায় এই কমিটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন । স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান এই কমিটিতে বর্তমানে ৬০ জনেরও বেশি সদস্য । তারা প্রতিনিয়ত এলাকার কমবয়সী ছেলেমেয়েদের সম্পর্কের খোঁজ খবর রাখেন । অল্প বয়সের ছেলে মেয়েদের বিয়ের কথা উঠলেই প্রথমে তারা গিয়ে তাদের জন্ম তারিখ সম্পর্কে খোঁজ নেন । পাশাপাশি অল্প বয়সে বিয়ে দেয়া হলে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে কি ধরনের কুপ্রভাব পড়তে পারে সেই সম্পর্কে এলাকাবাসীকে তারা সচেতনও করে। এই কারণেই ওই দুই এলাকায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানে কোন বাল্যবিবাহ হয়নি বলেই জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ বাবু । স্বাভাবিকভাবেই স্কুলশিক্ষকদের ও পুলিশ প্রশাসনদের অনেকটাই চিন্তা কমেছে । দীর্ঘদিন ধরে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকে থাকা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির প্রতিনিধিদের সম্বর্ধনা দেয়া হলো প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে । ২ রা আগস্ট এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তাদের হাতে স্মারক ও ফুলের তোড়া তুলে দেন পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের বিডিও দেবব্রত জানা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক, সংস্থার কর্ণধার পার্থ দে। বিডিও দেবব্রত জানা বলেন অল্পবয়সীদের বিয়ে আটকাতে এই কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে জানতে পারি। ওদের এই ধরনের কাজ খুবই প্রশংসনীয়। এদিনের প্রচারে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার, বাবলি খাতুন, সোনালী খাতুন, সাবানা খাতুন,আলমিনা খাতুন সহ একাধিক সদস্যরা ।